যৌন মিলনে ও পারিবারিক জীবনে একজন ফৌজির দুঃখ ও বেদনা মূলক জীবন কাহিনীঃ-
যৌন মিলনে ও পারিবারিক জীবনে একজন ফৌজির দুঃখ ও বেদনা মূলক জীবন কাহিনীঃ-
একজন ফৌজের জীবন শুধু দুঃখময়ই থেকে যায়, কেননা তার মনের দুঃখ সে শুধু নিজেই জানে ৷ আর তার চেয়ে বড় দুঃখ ফৌজের স্ত্রীর ৷ কেননা সে বেচারি না কইতে পারে, না সইতে পারে ৷ এরা স্বামী ও স্ত্রী দুজনেই পরস্পর এতটাই ধৈর্যবান যে,অপেক্ষা শব্দটির অর্থ বদলে যায় ৷ অবশেষে এই শব্দটিও হার মেনে যায় ৷ মনের একান্তে নিভৃত কোনে কতটাই ব্যথা বেদনা ৷
ছুটি শেষে চোখের কোণ থেকে ঝর-ঝর করে ঝরে পড়া অশ্রুজল ৷ সে নিজেও জানে না যে না,কেন গড়িয়ে পড়ছে ৷ প্রতিটি ছুটি যেন নিত্যনতুন অনুভূতি ও মিলন মেলা ৷ খুশিতে ভরে যায় পুরো পরিবার ৷ কিন্তু এই খুশি অনেক মাপা তোলা ৷ বছরে 365 দিনের মধ্যে শুধু 80 থেকে 90 দিনের মেহমান ৷ বাস্তবটা অনেকটাই কঠিন,নিষ্ঠুর ও নির্মম ৷
লেখকের কলমের অনুভূতি হয়তো কোনো ফৌজির মনের দুঃখকে হালকা করার উদ্দেশ্যেই লেখা ৷ একজন বেকার ছেলে বেকারত্বের জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে ফৌজে ভর্তি হয়ে যায় ৷ কিন্তু সে জানে না যে,বেকারত্বের চেয়ে ফৌজের চাকরি করা কতটাই কষ্টকর ৷ অবিবাহিত সেই ছেলেটি যখন মা বাবার চোখের জলের মূল্য না দিয়ে হঠাৎ ফৌজে জয়েন করার সিদ্ধান্ত নেয় ৷ তখন সে ততটা অনুভব করে না ৷
কিন্তু বিয়ের পর একটি লাল টুকটুকে বউয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে,সে আর চোখের জল ধরে রাখতে পারে না ৷ কেননা সে এতদিনে তার দায়বদ্ধতা সম্পর্কে সচেতন হয়ে যায় ৷
স্ত্রীর অশ্রুজল ও দু-পা ধরে অনেক কাকুতি-মিনতির পরও, সে বেড়িয়ে পড়ে দেশ রক্ষার স্বার্থে, তথা পেট রক্ষার স্বার্থে ৷ বর্ডারের অবস্থা গতিক সে ভালো করে জানে কিন্তু স্ত্রীকে সে তবুও সান্ত্বনা দেয়, “আমি ভালো আছি,তুমি ভালো থেকো ৷” ভালোবাসার মানুষকেও তারা একে অপরকে ধোকা দেয় ৷ কিন্তু তারা দুজনেই জানে যে,তারা ভাল নেই ৷ টাকা পয়সাই সব কিছু হয় না ৷
যৌন মিলনে ও পারিবারিক জীবনে একজন ফৌজির দুঃখ ও বেদনা মূলক জীবন কাহিনীঃ-
এভাবে দূরে একাকীত্বে তাদের দুজনারই মন ভরে না ৷ তাই অবশেষে মনটাই মরে যায় ৷ সত্যিই অবাক করার বিষয়,এদের ত্যাগ ও বলিদান পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ৷ এদের কাছে ভালোবাসা শব্দটি তার নতুন রূপ পায়, কেননা এদের কাছে ভালোবাসার সংজ্ঞাই বদলে যায় ৷ অবশেষে চোখের জল শুকিয়ে যায়, শুধু মনে মনে কাঁদে ৷ এতদিনে দুজনার ছোট পরিবারে জন্ম নেয় একটি ফুটফুটে শিশু ৷ দূর থেকেই ফোনে আঁড়ি পেতে শুনে তার বাচ্চার আওয়াজ ৷
আর মুখের এক টুকরো মুচকি হাসিতে বুকের মধ্যে চেপে রাখা যন্ত্রণাকে সান্তনা দেয় ৷ চোখের মনি বাচ্চাটি একটু কান্না করলে কিংবা কষ্ট পেলে সে ভীষণ ব্যাথা পায়,সে কেঁদে ফেলে ৷ শুরুতে সেই শিশুটি বাবার গলা ধরে অনেক কেঁদেছে, “বাবা তুমি আমাকে ছেড়ে যেও না,আমাকেও তোমার সঙ্গে নিয়ে যাও ৷” আজ তার সাত বছর বয়স, এখন সে বুঝে গেছে, বাবাকে যেতেই হবে ৷ তাই কেঁদে কি হবে “আবার তো আসবে” শুধু একটুকু দীর্ঘশ্বাস ৷সামনে পুজো কিংবা ঈদ আসছে,”বাবা থাকলে কতই না মজা হতো,কত কিছুই না কিনে দিত ৷ ঠিক আছে মায়ের কাছ থেকে না হলে কিনে নেব ৷” এখন সে মাকেও শান্তনা দিতে শিখে গেছে “আর কেঁদোনা বাবা চলে আসবে৷”
স্বামী চলে যাওয়ার দিনটিকে ক্যালেন্ডারে কলম দিয়ে গোল ঘেরা করে দেওয়া কিংবা প্রতিটি দিন গুনে যাওয়া, কতদিন হল যাওয়ার ? অথবা কবে ফিরে আসবে ? ফোনে কথা হলে শুধু একটাই প্রশ্ন থেকে যায়…. তুমি কবে আসবে ? অপরদিকে ফৌজি স্বামী এই প্রশ্নের উত্তর কোন দিনই দিতে পারে না ৷ শুধু টালবাহানা করে,এই প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যায় ৷ কেননা সে নিজেও জানে না,সে কবে ছুটি পাবে এবং ছুটিতে যাবে ৷ কে বলে ফৌজিরা শুধু নিষ্ঠুর হয় ? তারাও কাঁদে,তাদেরও অশ্রূজল বের হয় ৷ কেননা তারাও রক্তে মাংসে গড়া মানুষ ৷ তাদেরও মন আছে,তারাও কোন না কোন মায়ের সন্তান !
For more updates, Breaking News and live News updates, like us on Facebook page or Follow us on Twitter and Instagram. Read more Latest News on AOB News.in
